Friday 10 February 2017

Durga Astottarasatanaam শ্রীশ্রীদুর্গাষ্টোত্তরশতনাম

দুর্গা ও নন্দী সংবাদ
নমোনমঃ চণ্ডীদেবী মঙ্গলদায়িনী ।
 জয় জয় মহামায়া ত্রিদিব-জননী ।।
 আমি অতি হীনমতি না জানি পূজন ।
 দয়া ক'রি দিও মাগো ও রাঙ্গা চরণ ।।
 ত্রিলোকতারিণী তারা অগতির গতি ।
 শ্রীচরণে স্থান দিও ওমা ভগবতী ।।
 জয় মা কৈলাসেশ্বরী শিবের শিবানী ।
 দীনহীন ডাকে তোমা ওগো নিস্তারিণী ।।
 নিজগুণে কর দয়া ওমা হররাণি ।
 মহেশ্বরী সর্ব্বপাপতাপ নিবারিণী ।।
 পাপবিনাশিনী দুর্গে জগতবন্দিনী ।
 সুফলদায়িকা যশঃ দেহি মে ভবানী ।।
 বিপদে কর মা ত্রাণ সঙ্কটহারিনী ।
 জগত জননী মাগো নরকবারিণী ।।
 হরপাশে বসি গৌরী কৈলাসশিখরে ।
 নানারূপ কন কথা হরিষ অন্তরে ।।
 হেনকালে নন্দী আসি দোঁহার সাক্ষাতে ।
 প্রণমিল উভয়েরে ভক্তিপূর্ণ চিতে ।।
 দয়াময়ী দুর্গা নামে কলঙ্ক শ্রবণে ।
 দাঁড়াইল সেই স্থানে বিষাদিত মনে ।।
 নন্দীরে হেরিয়া দেবী বিরস বদন ।
 হাসিমুখে সুধালেন তাহারে তখন ।।
 ঘটিয়াছে কিবা বাছা কহ মোর পাশ ।
 কি হেতু হয়েছ তুমি এরূপ হতাশ ।।
 দেবী বাক্য শুনি কহে শ্রীনন্দীকেশর ।
 দহিতেছে মাগো বড় এ পোড়া অন্তর ।।
 ছদ্মবেশে করি যবে পৃথিবী ভ্রমণ ।
 পাষাণী কহিল তোমায় যত নরগণ ।।
 মর্ত্ত্যবাসী সবে যত বলে পরস্পরে ।
 দুঃখহরা নাম সবে ভুল অতঃপরে ।।
 কে বলে করেন দুর্গা দুর্গতি নাশন ।
 দুর্গানামে ফলে এবে দারিদ্র্য পীড়ন ।।
 পাষাণী নামেতে মাগো বড় ব্যথা পাই ।
 দহিছে অন্তর মোর ভেবে শুধু তাই ।।
 জীবের দুর্গতি হেরি এনু তব পাশ ।
 কর দয়া জীবগণে ক'রনা নৈরাশ ।।
 দয়াময়ী মা তোমায় বলে সর্ব্বজন ।
 কর ত্রাণ নরগণে দিয়ে শ্রীচরণ ।।
 জীবের দুর্গতি হেরি পেয়েছি বেদন ।
 কর মা জীবের তুমি দুর্গতি মোচন ।।
 নাই কারো অন্নবস্ত্র ক'রিছে রোদন ।
 হা অন্ন হা অন্ন বলি কাঁপায়ে ভুবন ।।
 বড় ব্যথা পায় মাগো মর্ত্তবাসিগণে ।
 নাশহ তাদের দুঃখ ভিক্ষা শ্রীচরণে ।।
 শুনিয়া নন্দীর বাক্য কহেন শঙ্করী ।
 নরগণ পায় দুঃখ দেবতা পাশরি ।।
 অনাচারে পূর্ণ এবে হ'য়েছে ধরণী ।
 নিজ দোষে পায় দুঃখ আপনা আপনি ।।
 প্রভাতে উঠিয়া তারা দেবতা না স্মরে ।
 ধরাখানা সরা দেখে অহঙ্কার ভরে ।।
 যা হোক্ তা হোক্ বাছা কহি তব পাশ ।
 যাহাতে জীবের হবে দুর্গতি বিনাশ ।।
 অষ্টোত্তর শতনাম করিলে পঠন ।
 আমার নামেতে হবে দুর্গতি মোচন ।।
 ছদ্মবেশে যাও বাছা অবনী-মাঝার ।
 মম নাম আছে যত করগে প্রচার ।।
 মম নাম বাছা তুমি দাও জনে জনে ।
 নাম যেন লয় তারা ভক্তিপূর্ণ মনে ।।
'মা', 'মা' বলি আমারে যে ডাকে ভক্তিভরে ।
 সদা বাঁধা থাকি বৎস আমি তার ঘরে ।।
 শ্রীনন্দীকেশর কহে দেবী বাক্য শুনি ।
 শ্রীমুখেতে তব নাম বল গো জননী ।।
 করহ বর্ণনা নাম মাগো নিজ মুখে ।
 প্রচারিব মর্ত্ত্যলোকে আমি মন সুখে ।।
 অসংখ্য আমার নাম শুন বাছাধন ।
 অষ্টোত্তর শতনাম কহিব এখন ।।
 শ্রীদুর্গার নাম যে বা করিবে পঠন ।
 অবশ্য হইবে তার দুর্গতি মোচন ।।
 শুন বাছা যে গৃহেতে থাকে মোর নাম ।
 মম বরে হয় তার পূর্ণ মনস্কাম ।।
 নাম আরম্ভ
 জয় দুর্গা (১) দুঃখহরা (২) কৃতান্তদলনী (৩) ।
মহামায়া (৪) কালজায়া (৫) মাগো কাত্যায়নী (৬) ।।
জগত-জননী উমা (৭) ভবেশঘরণী (৮) ।
কর দয়া দয়াময়ী ত্রিদিব জননী (৯) ।।
কালরাত্রি করালিনী (১০) কপালমালিকে (১১) ।
কাতরে করুণা কর জয় মা কালিকে (১২) ।।
কীর্ত্তিবাসপ্রিয়া (১৩) মহারাত্রি মহোদরী (১৪) ।
মহারাণী সুরেশ্বরী (১৫) নমো মা শঙ্করী (১৬) ।।
ব্রহ্মাণ্ড জননী (১৭) তুমি শিবের শিবানী (১৮) ।
প্রণমামি পদে তব সত্যসনাতনী (১৯) ।।
কাতর দেখিয়া কৃপা কর মা ভবানী (২০) ।
অন্নপূর্ণা (২১) মহেশ্বরী (২২) জগততারিণী (২৩) ।।
সর্ব্বসুখদাত্রী মাগো তুমি ভগবতী (২৪) ।
কৃপা কর মহেশ্বরী (২৫) অগতির গতি ।।
 নমস্তে সর্ব্বাণী (২৬) মাগো ঈশানী (২৭) ইন্দ্রাণী (২৮) ।
ঈশ্বরী (২৯) ঈশ্বর জায়া গণেশজননী (৩০) ।।
উগ্রচণ্ডা (৩১) উমা অপরাজিতা (৩২) উর্ব্বশী (৩৩) ।
জয় মা রাজরাজেশ্বরী (৩৪) শিবে ষোড়শী (৩৫) ।।
মাতঙ্গী (৩৬) বগলে (৩৭) কল্যাণী কমলে (৩৮) গায়ত্রী (৩৯) ভুবনেশ্বরী (৪০) ।
সর্ব্ববিশ্বোদরী (৪১) শুভে শুভঙ্করী (৪২) ক্ষান্তি ক্ষেম ক্ষেমঙ্করী (৪৩) ।।
সহস্র স্বহস্তে ভীমে ছিন্নমস্তে (৪৪) মাতা মহিষমর্দ্দিনী (৪৫) ।
নিস্তার-কারিণী নরকবারিণা নিশুম্ভ-শুম্ভঘাতিনী ।।
 দৈত্য-বিনাশিনী শিব-সীমন্তিনী শৈলসুতে সুবদনী (৪৬) ।
বিরিঞ্চি-নন্দিনী (৪৭) পাপবিনাশিনী দিগম্বরের ঘরণী (৪৮) ।।
দেবী দিগম্বরী (৪৯) দুর্গে দুর্গে অরি কালিকে করাল কেশী ।
 শিবে (৫০) শবারূঢ়া চণ্ডী (৫১) চন্দ্রচূড়া ঘোররূপা এলোকেশী (৫২) ।।
শারদা (৫৩) বরদা (৫৪) শুভদা সুখদা অন্নদা (৫৫) কালিকে শ্যামা (৫৬) ।
মৃগেশবাহিনী (৫৭) মহেশ ভাবিনী (৫৮) সুরেশ বন্দিনী বামা ।।
 কামাক্ষা রুদ্রাণী (৫৯) হরা হররাণী (৬০) মনোহরা কাত্যায়নী ।
 শমনত্রাসিনী (৬১) অরিষ্টনাশিনী (৬২) দয়াময়ী দাক্ষায়ণী (৬৩) ।।
হের মা পার্ব্বতী (৬৪) ওমা ভগবতী আমি দীনহীন অতি ।
 কর মোরে দয়া ওগো মহামায়া জানি মোরে মূঢ়মতি ।।
 নমস্তে শঙ্করী শঙ্কর সুন্দরী (৬৫) শিবা শাকম্ভরী (৬৬) শ্যামা ।
 শিব-সহচরী (৬৭) মায়া মহোদরী (৬৮) মহেশ্বরী হররমা (৬৯) ।।
ত্রিতাপহারিণী (৭০) ত্রিগুণা-তারিণী গুণময়ী গুণাত্মিকে ।
 কৌষিকী কমলা করালী বিমলা (৭১) অভয়া (৭২) অম্বে অম্বিকে ।।
 ভবে ভবরাণী (৭৩) তরণী ভবানী ভাবিনী ভব-মনোহরা (৭৪) ।
ব্রহ্মাণী (৭৫) রুদ্রাণী কৌমারী সর্ব্বাণী ভয়ঙ্করী শিবকরা ।।
 শিব-নিতম্বিনী (৭৬) অরিষ্ট স্তম্ভিনী (৭৭) সুরাসুর নরধাত্রী (৭৮) ।
অপর্ণা (৭৯) অন্নদা (৮০) সর্ব্বাণী সারদা শিবে সর্ব্বসিদ্ধিদাত্রী (৮১) ।।
চামুণ্ডে (৮২) চণ্ডিকে নৃমুণ্ডমালিকে (৮৩) নারায়ণী (৮৪) শিবদারা (৮৫) ।
শাস্তি কান্তিকরী (৮৬) ক্ষমা ক্ষেমঙ্করী ত্রিলোকতারিণী তারা (৮৭) ।।
মহা মহেশ্বরী প্রিয়ে প্রিয়ঙ্করী (৮৮) শুভঙ্করী কপালিনী (৮৯) ।
জগতজননী মৃগাঙ্ক-আননী (৯০) ভীমে (৯১) নৃমুণ্ডমালিনী (৯২) ।।
গিরীন্দ্র নন্দিনী (৯৩) গিরীশ বন্দিনী (৯৪) গোমাতা গৌরী (৯৫) গান্ধারী ।
 গো-গজ জননী (৯৬) গজেন্দ্রগামিনী গীতা গোপেশকুমারী (৯৭) ।।
গোবিন্দ ভগিনী (৯৮) যোগেশ যোগিনী (৯৯) দৈবকী গর্ভস্রাবিণী ।
 পরা-পরায়ণী (১০০) দেবী দাক্ষায়ণী দক্ষযজ্ঞ বিনাশিনী (১০১) ।।
চন্দ্রে চন্দ্রচূড়া হরসিংহারূঢ়া (১০২) মতি মেনকা দুলালী (১০৩) ।
শ্রাস্তে চণ্ডিকা অশিব খণ্ডিকা ভদ্রকালী (১০৪) মহাকালী (১০৫) ।।
দানব কৃন্তিনী বৈষ্ণবী জম্ভিনী (১০৬) ভৈরবী বিজয়া জয়া (১০৭) ।
বল প্রমথিনী মন্মথমথিনী (১০৮) মহিষঘাতিনী দয়া ।।
 নমস্তে কালিকে কালভয়নিবারিণী ।
 জয় জয় সর্ব্বভূতে কল্যাণকারিণী ।।
 নমঃ কালী কালাকালে কালনিবারিণী ।
 মহাকাল মনোহরা মহেশ-মোহিনী ।।
 ত্রিলোচনা উমা ধূমা বিকলা বিমলা ।
 মুণ্ডমালা বিভূষণা ভৈরবী বগলা ।।
 দৈত্যবিনাশিনী মাতা মহিষমর্দ্দিনী ।
 মহামায়া মহেশ্বরী করুণাদায়িনী ।।
 কালরাত্রি করালিনী স্মরহর-প্রিয়ে ।
 রাখ মা চরণতলে কৃপা বিতরিয়ে ।।
 ত্বমেব শারদাশিবা শঙ্করী কমলা ।
 ত্বমেকা প্রকৃতি পরা মহিমা অচলা ।।
 বিশ্বকর্ত্রী শৈলপুত্রী স্কন্দমাত্রী ভীমা ।
 গায়ত্রী অনন্তশক্তি অনন্ত অসীমা ।।
 জগতে দায়িনী জয় জগদম্বা তারা ।
 যোগেশী যোগিনী জয়া যোগেশ্বর দারা ।।
 শত্রুজয়ী হয় তারা যে তোমারে স্মরে ।
 বিষম বিপদ হ'তে অনায়াসে তরে ।।
 দুর্গানামে দুঃখ হরে দিগম্বর কয় ।
 জনম মরণ নাশে যায় যমভয় ।।
 বিপদে যে দুর্গানাম বলে একবার ।
 নিশ্চয় চলিয়ে যায় বিপদ্ তাহার ।।
 দুর্গা বলি যেই জন ডাকে মনে প্রাণে ।
 সম্পদ্ বর্দ্ধিত হয় নামের স্মরণে ।।
 কর দয়া মহামায়া ওমা শিবরাণী ।
 যোড় করে যাচে ইন্দু চরণ দু'খানি ।।
 ইতি শ্রীশ্রীদুর্গার অষ্টোত্তর শতনাম সমাপ্ত

Thursday 9 February 2017

Devi Bhagwat : Devi Bhagwat in Bengali, Devi Bhagwat Mahatya Chapter 2 দেবী ভাগবত পুরাণ

দেবী ভাগবত পুরাণ
               শ্রীমদ্দেবীভাগবত-মাহাত্য
দ্বীতিয়োধ্যায়
দেবীভাগবত মাহাত্য-প্রসঙ্গে জাম্ববানের নিকট হতে শ্রীকৃষ্ণের মণি প্রাপ্তি তথা জাম্ববতী সহিত বিবাহ করে দ্বারকায় পুনঃ আগমনের কথা
ঋষিগণ প্রশ্ন করিলেন -
হে মহাবুদ্ধিমান সূত! মহাভাগ বসুদেব কেমন করে পুত্রকে প্রাপ্ত করলেন? ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পরিভ্রমণ করে প্রসেনকে কোথায় খুঁজেছিলেন এবং কি কারণে খুঁজেছিলেন? ।।১।।
শ্রীমদ্দেবীভাগবতের এই কথা বসুদেব কোন বিধির দ্বারা শ্রবণ করেছিলেন এবং এর বক্তা কে হয়েছিলেন? এসব বর্ণনা করার কৃপা করুন ।।২।।
ঋষি সূত কহিলেন -
ভোজবংশী রাজা সত্রাজিত দ্বারকায় সুখপূর্বক নিবাস করতেন। তিনি সদা সূর্যদেবের আরাধনা করতেন ।।৩।।
ভগবান সূর্যদেব সত্রাজিতের ভক্তিতে পরম প্রসন্ন হয়ে তাকে নিজ লোকের দর্শন করালেন ।।৪।।
তিনি তাকে 'স্যমন্তক' নামক মণি প্রদান করলেন। সত্রাজিত সেই মণি গলে ধারণ করে দ্বারকায় আসিলেন ।।৫।।
সেই মণি ছিল অত্যন্ত ভাস্বরযুক্ত। তাকে দর্শণ করে পুরবাসিরা ভাবিলেন ইনি সূর্যনারায়ণ। অতঃএব সভায় তিষ্ঠ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিকট গমন করে তাকে কহিলেন - 'হে জগতপ্রভু ! সূর্যনারায়ণ দেব পদার্পণ করিছেন'। তাদের কথা শ্রবণ করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখমণ্ডল হাস্যে পরিণত হল ।।৬-৭।।
তিনি কহিলেন - 'হে বালকগণ! ইনি সূর্যনারায়ণ নয়। স্যমন্তকমণি ধারণ করে সত্রাজিত পদার্পণ করিছেন। এই মণির কারণেই তার এমন জ্যোতি। দেব সূর্যনারায়ণ তাহাকে এই মণি প্রদাণ করেছেন ।।৮।।
তদনন্তর বিপ্রগণকে ডেকে সত্রাজিত তাদের দ্বারা স্বস্তি-যাচন করালেন, মণির পূজা করিলেন এবং সেই মণিকে নিজ ভবনে স্থাপিত করিলেন ।।৯।।
প্রতিদিন আঠ ভার সুবর্ণ প্রদানকারী এই মণি যেই স্থানেই অবস্থিত থাকিত, সেথায় মহামারী, দুর্ভিক্ষ এবং অন্য উৎপাতসম্বন্ধী ভয় কদাপি থাকিত না ।।১০।।
সত্রাজিতের প্রসেন নামক এক ভ্রাতা ছিল। এক বার তিনি সেই মণিকে গলে ধারণ করে অশ্বোপরি তিষ্ঠ হয়ে শিকার করিতে বনে গমন করলেন। তাকে সিংহ দর্শণ করতেই অশ্বসহিত হত্যা করে মণি অধিকার করিল ।।১১-১২।।
ঋক্ষরাজ জাম্ববান সেথায় গমন করেছিলেন। তিনি দেখলেন, সিংহ মণি অধিকার করেছেন। অতঃএব বিলের দ্বারেই সিংহকে বধ করে তিনি সেই মণি অধিকার করলেন ।।১৩।।
তিনি সেটিকে নিজ পুত্রকে ক্রীড়ার্থে প্রদান করিলেন। তার পুত্র সেই ভাস্বরযুক্ত মণি গ্রহণ করে ক্রীড়া করিতে লাগিল ।।১৪।।
কিছু কালান্তরের পশ্চাৎও যখন প্রসেনের পুনঃআগমন ঘটিল না তখন সত্রাজিতের মহান দুঃখ হল। তিনি কহিলেন - 'কে জানে কার মণি প্রাপ্ত করার ইচ্ছা হল, কার হাথে প্রসেন কালের গ্রাস হয়ে গেল!' ।।১৫।।
এরপর জনসমাজের মুখে দ্বারকায় এই প্রকারের নিন্দা কথিত হল যে মণির প্রতি আসক্তির কারণে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ প্রসেনকে বধ করেছে ।।১৬।।
এই কথা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রবণ করিলেন। তখন নিজের উপর এই মিথ্যা কলঙ্ককে দূর করিতে তিনি কিছু পুরবাসি সহিত যাত্রা প্রারম্ভ করিলেন ।।১৭।।
তিনি বনে গমন করিলেন। সেথায় সিংহদ্বারা হত প্রসেনকে দেখিলেন। রক্তদ্বারা চিহ্নিত মার্গে সিংহকে খুজতে তিনি অগ্রসর হলেন ।।১৮।।
একটি বিলের দ্বারে মৃত সিংহকে দেখিলেন। তখন তিনি পুরবাসিদের কৃপাবশত কহিলেন - 'তোমরা আমার পুনঃআগমন না হওয়া পর্যন্ত এখানেই অপেক্ষা কর। মণি হরণকারি ব্যক্তিকে খুজিতে আমি বিলে প্রবেশ করছি' ।।১৯-২০।।
যথাআজ্ঞা কহে পুরবাসী সেই স্থানেই তিষ্ট হলেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিলের অন্দরে সেই স্থানে গমন করিলেন যেখানে জাম্ববানের নিবাস ছিল ।।২১।।
তিনি ঋক্ষরাজের বালককে মণি হস্তে দেখিলেন। তিনি মণি হরণ করার প্রচেষ্ঠা করিলেন। ইতিমধ্যেই ধাত্রী ভীষণ শব্দে গর্জনা প্রারম্ভ করিল ।।২২।।
ধাত্রির গর্জনা শ্রবণ করে সেই স্থানে শীঘ্রই জাম্ববানের আগমন ঘটিল। তার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সহিত যুদ্ধ প্রারম্ভ হয়ে গেল। অহর্নিশি সেই যুদ্ধ চলিল ।।২৩।।
সপ্তবিংশ দিবস পর্যন্ত তাদের মধ্যে ঘোর সংগ্রাম চলিল। অন্যদিকে দ্বারকাবাসী বিলের দ্বারে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতীক্ষায় ছিল ।।২৪।।
দ্বাদশ দিবস তারা প্রতীক্ষা করিল। তৎপশ্চাৎ ভীত হয়ে তারা নিজ-নিজ গৃহে গমন করিল। সেথায় গমন করে তারা প্রারম্ভ হতে অন্ত পর্যন্ত সমস্ত কথা কহিলেন ।।২৫।।
সেই কথা শ্রবণ করে সবারই মহান কষ্ট হল। তারা তখন সত্রাজিতের নিন্দা করিতে লাগিল। নিজ পুত্রের এই কষ্টের কথা মহাভাগ বসুদেবের কর্ণেও প্রবেশ করিল ।।২৬।।
সপরিবার তিনি শোকসাগরে ওঠা-নামা করিতে লাগিলেন। 'এবার আমার কল্যাণ কিপ্রকারে হবে!' এমন অনেক চিন্তাই তার মনে উৎপন্ন হল ।।২৭।।
সেইকালেই ব্রহ্মলোক হতে দেবর্ষি নারদের সেথায় আগমন ঘটিল। বসুদেব উঠিয়া মুনিকে প্রণাম করিলেন। তার যথোচিত পূজা করিলেন ।।২৮।।
নারদমুনি বুদ্ধিমান বসুদেবের কুশল-সংবাদ নিলেন। এরপর তিনি প্রশ্ন করিলেন - 'হে যদুশ্রেষ্ঠ! আপনি কি কারণে চিন্তাগ্রস্থ?' ।।২৯।।
বসুদেব কহিলেন -
আমার প্রিয় পুত্র শ্রীকৃষ্ণ প্রসেনের সন্ধান করিতে পুরবাসিসহিত বনে গমন করেছিল। মৃত প্রসেনের উপর তার দৃষ্টি পরেছিল ।।৩০।।
বিলের দ্বারে প্রসেনের হত্যাকারী সিংহকে মৃত দেখিল। তখন পুরবাসিদের বিলের দ্বারেই অপেক্ষা করিয়ে সে স্বয়ং অন্দরে প্রবেস করিল ।।৩১।।
হে মুনি! বহু দিবস ব্যতীত হয়ে গিয়েছে, এখনও আমার সেই প্রাণপ্রিয় পুত্রের পুনঃআগমন হল না। এতেই আমি চিন্তিত। কৃপা করে এমন কোন উপায় বলুন যার দ্বারা আমার পুত্রের শীঘ্রই পুনঃআগমন ঘটে ।।৩২।।
দেবর্ষি নারদ কহিলেন -
হে যদুশ্রেষ্ঠ! আপনি পুত্রপ্রাপ্তির হেতু অম্বিকা দেবীর আরাধনা করুন। তার আরাধনার দ্বারাই আপনার শীঘ্র কল্যাণ হবে ।।৩৩।।
বসুদেব কহিলেন -
হে দেবর্ষি! সেই অম্বিকা দেবী কে? তার মহিমা কি এবং কি প্রকারে তার পূজা হয়? হে ভগবন! ইহা বলিবার কৃপা করুন ।।৩৪।।
দেবর্ষি নারদ কহিলেন -
হে মহাভাগ বসুদেব! দেবী অম্বিকার মাহাত্য অতুল্য। তার সম্পূর্ণ মাহাত্যকে বিস্তাররূপে কে বলতে পারে! আমি সংক্ষেপে কিছু বলছি তা শ্রবণ করুন ।।৩৫।।
ভগবতী অম্বিকা নিত্যা। তিনি সচ্চিদানন্দরূপিণী। তিনি সর্বোপরি। এই সম্পুর্ণ চরাচর জগতে তিনি ব্যাপ্ত ।।৩৬।।
তার আরাধনার প্রভাবেই জগতপিতা ব্রহ্মা এই চরাচর জগতের সৃজন করেন। মধু এবং কৈটভের দ্বারা ভয়ভীত হয়ে পিতামহ দেবীর স্তুতি করেছিলেন আর তার প্রসাদ রূপে সেই ভয় হতে মুক্ত হয়েছিলেন ।।৩৭।।
তারই কৃপায় ভগবান বিষ্ণু এই জগতের সংরক্ষণ করেন। ভগবান রুদ্র সংসারের সংহারকার্যে সফল তখনই হন যখন দেবী তার কৃপাদৃষ্টি নিরীক্ষণ করেন ।।৩৮।।
তিনিই এই সংসার বন্ধনের কারণ, আবার তিনিই মুক্তিপ্রদায়িনী। সেই দেবী পরম বিদ্যাস্বরূপিণী, তিনি সর্বেশ্বরেরও ঈশ্বরী ।।৩৯।।
আপনি নবরাত্র-বিধিতে সেই ভগবতী জগদম্বিকার পূজা করে নয় দিবসে শ্রীমদ্দেবীভাগবত পুরাণ শ্রবণ করুন ।।৪০।।
সেই পুরাণের শ্রবণ মাত্রই শীঘ্রই আপনার পুত্রের পুনঃআগমন ঘটিবে। যে এই পুরাণের পাঠ এবং শ্রবণ করে তার থেকে ভুক্তি-মুক্তি দূরে থাকিতে পারে না ।।৪১।।
এই কথা বলার পরে শ্রী বসুদেব নারদ মুনিকে মস্তক ঝুকিয়ে চরণে প্রণাম করিলেন এবং অপার প্রসন্নতা প্রকট করে কহিলেন ।।৪২।।
বসুদেব কহিলেন -
হে ভগবান! আপনার বাক্যের দ্বারা আমার ভগবতী জগদম্বিকার কৃপা-প্রসাদের দ্বারা সিদ্ধ নিজের পূর্বপ্রসঙ্গ স্মরন হল। সেই দেবীর মাহাত্য কথা আমি বলছি, আপনি শ্রবণ করুন ।।৪৩।।
পুরাতন কথা, আকাশবাণী দ্বারা জ্ঞাত হয়ে যে 'দেবকীর অষ্টম গর্ভের দ্বারাই কংসের নিধন হবে' সেই পাপী কংস ভয়ের কারণে আমাকে সভায় ঘিরে ধরেছিল ।।৪৪।।
নিজ ভার্যা দেবকীর সহিত আমাকে কারাগারে বাস করিতে হয়েছিল। যত বার আমার পুত্রের জন্ম হত ততবার পাপকর্মে লিপ্ত সেই কংস তাকে বধ করিত ।।৪৫।।
কংসের হস্তে আমার ছয় পুত্র নিহত হওয়ার কারণে দেবকী শোকে আকুল হয়ে গিয়েছেল। সেই দেবী রূপী নারী দিবস-রাত্রি কেবল চিন্তা করিত ।।৪৬।।
তখন আমি গর্গমুনিকে আহবান করে তার চরণে মস্তক নত করে তাকে পূজেছিলাম। তার কাছে দেবকীর দুঃখ কথা নিবেদন করে পুত্র প্রাপ্তির কামনা প্রকট করেছিলাম ।।৪৭।।
আমি বলেছিলাম - "হে ভগবান! আপনি করুণাসিন্ধু। আপনি যদুদের গুরু। হে মুনি! আপনি দীর্ঘজীবী পুত্র প্রাপ্তির সাধন বলিবার কৃপা করুন" ।।৪৮।।
তখন দয়ানিধি গর্গমুনি আমার দ্বারা প্রসন্ন হয়ে কহিলেন - হে মহাভাগ বসুদেব! দীর্ঘজীবী পুত্র প্রাপ্ত করিবার উপায় আমি বলছি, তুমি শ্রবণ কর ।।৪৯।।
সেই ভগবতী দুর্গা ভক্তদুর্গতিহারিণী। তুমি সেই কল্যাণী দেবীর আরাধনা কর। তার আরাধনার দ্বারাই তোমার শ্রেয় হবে ।।৫০।।
তার আরাধনার দ্বারাই সবার সর্বমনোকামনা পূর্ণ হয়। যার ভগবতী দুর্গার উপরে ভক্তি আছে তার কাছে জগতে কিছুই দুর্লভ নেই ।।৫১।।
মুনির এই বচনের পর আমাদের উভয়ের হৃদয়ে অপার হর্ষ হল। আমি অত্যন্ত ভক্তিপূর্বক ওনাকে প্রণাম করিলাম এবং জোরহস্তে কহিলাম ।।৫২।।
বসুদেব কহিলেন -
হে ভগবান! আপনি করুণানিধি। যদি আমার উপরে আপনার প্রীতি থাকে তবে মথুরাপুরীতেই আপনি আমার হেতু চণ্ডিকা দেবীর আরাধনা প্রারম্ভ করে দিন ।।৫৩।।
হে মহামতি! আমি কংসের গৃহে নিরুদ্ধ। আমার উৎসাহ থাকিলেও আমি কেমন করে করিব? অতএব আপনিই এই দুঃখরূপী দুস্তর সাগর হতে উদ্ধার করার কৃপা করুন ।।৫৪।।
এই প্রকার আমার কথার পর মুনিবর আমার প্রতি প্রসন্ন হয়ে কহিলেন - 'বসুদেব! তুমি আমার অতি প্রিয় পাত্র, অতএব তোমার হিত আমি অবশ্যই করিব' ।।৫৫।।
অতএব আমার প্রতি প্রীতির কারণে এবং আমার প্রেমপুর্বক প্রার্থনা করার পর গর্গমুনি দেবী দুর্গার আরাধনা করিবার জন্য ব্রাহ্মণ সহিত বিন্ধ্যপর্বতে গমন করিলেন ।।৫৬।।
সেথায় গমন করে তিনি জপ-পাঠে সংলগ্ন হয়ে ভক্তঅভীষ্টপ্রদায়িনী দেবী জগদ্ধাত্রীর আরাধনা করিতে লাগিলেন ।।৫৭।।
যথাকালে নিয়ম-অনুষ্ঠানের সমাপ্তির পর আকাশবাণী হল - "হে মুনিবর! আমি প্রসন্ন। তোমার কার্যসিদ্ধি অবশ্যই হবে।" ।।৫৮।।
ভুভারহরণার্থে আমি শ্রীহরিকে সংবাদ প্রেরণ করেছি। বসুদেবের নিকটে দেবকীর গর্ভ হতে তিনি তাঁর অংশাবতার গ্রহণ করিবেন ।।৫৯।।
কংসের ভয়ে ভীত হয়ে বসুদেব সেই বালককে প্রাপ্ত করে তাঁকে গোকুলে নন্দের গৃহে পৌছে দেবেন ।।৬০।।
তিনি যশোদার কন্যাকে স্বগৃহে আনিয়া কংসের হস্তে প্রদান করিবেন। কংসের হস্তে প্রদান করা মাত্রই কংস তাঁকে হত্যা করিতে ক্ষিতিতে নিক্ষেপ করিবে ।।৬১।।
তখনই সেই কন্যা তার হস্ত হতে নির্গমন করিবে এবং তাঁর দিব্য রূপ প্রকট হবে। আমারই অংশরূপ ধারণ করে সে বিন্ধ্যগিরিতে গমন করে জগত কল্যাণে সংলগ্ন হবে ।।৬২।।
এই প্রকার দেবীর বচন শ্রবণ করে গর্গমুনি জগদম্বিকাকে প্রণাম করিলেন। অত্যন্ত প্রসন্ন হয়ে তিনি মথুরাপুরীতে আগমন করিলেন ।।৬৩।।
গর্গআচার্যের মুখ হতে আমি মহাদেবীর বরদান শ্রবণ করিলাম। ভার্যাসহিত শ্রবণ করে আমার অত্যন্ত প্রীতি হল। আমার হৃদয়ে আনন্দ সমুদ্রের আগমন হল ।।৬৪।।
সেইকাল হতেই আমার দেবীর উত্তম মাহাত্যের জ্ঞান হয়েছিল। হে দেবর্ষি! এখনও আমি আপনার মুখারবিন্দ হতে সেই মাহাত্যই শ্রবণ করিতেছি ।।৬৫।।
অতএব হে প্রভু! আপনিই আমাকে দেবীভাগবত শোনাবার কৃপা করুন। হে দেবর্ষি! আপনি দয়ানিধি, আমার সৌভাগ্যের কারণেই আপনার এই স্থানে আগমন ঘটেছে ।।৬৬।।
বসুদেবের বচন শ্রবণ করে নারদের মনে প্রীতি হল। সুদিনে এবং শুভনক্ষত্রে তিনি কথা আরম্ভ করিলেন ।।৬৭।।
কথার নির্বিঘ্নে সমাপ্তির জন্য অনেক দ্বিজ নবার্ণ-জপ করিতে লাগিল এবং মার্কণ্ডেয়পুরাণে উক্ত দেবীর স্তব পাঠ করিতে লাগিল ।।৬৮।।
শ্রীনারদ প্রথম স্কন্ধ হতে কথা আরম্ভ করিলেন। বসুদেব ভাগবতামৃত ভক্তিপূর্বক শ্রবণ করিতে লাগিলেন ।।৬৯।।
নবম দিবসে কথার পূর্তি হবার পর মহামনা বসুদেব প্রসন্ন হয়ে পুস্তক এবং কথাবাচকের যথোচিত পূজা করিলেন ।।৭০।।
সেই কালে বিলে জাম্ববান সহিত ভগবান শ্রীকৃষ্ণের যুদ্ধ চলছিল। কিছুকাল পশ্চাৎ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুষ্টিপ্রহারের দ্বারা জাম্ববান আহত হল, তাঁর দেহ রক্তে জর্জরিত হল  ।।৭১।।
স্মৃতি ফেরার পর তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণে প্রণাম করিলেন এবং অপার ভক্তি প্রকট করে নিজ অপরাধের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে কহিলেন - "হে ভগবান! আমার জ্ঞান হয়েছে, আপনিই রাঘবেন্দ্র শ্রীরামচন্দ্র। আপনার রোষেই সরিতাপতি(শ্রীসমুদ্রদেব) ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। রাবণ সপরিবার হত হয়ে লঙ্কা হতে দূর হয়ে গিয়েছিল। হে ভগবান! সেই আপনিই শ্রীকৃষ্ণ রূপে আগমন করেছেন। আমার উদ্দণ্ডতাকে ক্ষমা করুন। হে প্রভু! আমি সর্বথা আপনার ভৃত্য, আপনি বলুন আমার কি করণীয়।" ।।৭২-৭৪।।
জাম্ববানের বচন শ্রবণ করে জগদীশ্বর কহিলেন - "হে ঋক্ষরাজ! মণিপ্রাপ্তি হেতু আমার এই বিলে আগমন ঘটেছে।" ।।৭৫।।
এরপর ঋক্ষরাজ জাম্ববান প্রীতিসহিত তাঁর পূজা করে তাঁকে নিজ কন্যা জাম্ববতী এবং স্যমন্তকমণি দান করিলেন ।।৭৬।।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দেবী জাম্ববতীকে পত্নীর সম্মান প্রদান করিলেন তথা মণি কণ্ঠে ধারণ করিলেন এবং ঋক্ষরাজের নিকট হইতে বিদাই অনুমতি গ্রহণ করে দ্বারকার প্রতি প্রস্থান করিলেন ।।৭৭।।
কথাসমাপ্তির দিবসে উদারবুদ্ধি বসুদেব ব্রাহ্মণদের ভোজন করিয়ে তাদের দক্ষিণার দ্বারা প্রসন্ন করিলেন ।।৭৮।।
বিপ্রগণ আশীর্বাদ করছিলেন ঠিক সেই সময় শ্রীহরি মণি ধারণ করে পত্নীসহিত সেথায় আগমন করিলেন ।।৭৯।।
ভার্যাসহিত শ্রীকৃষ্ণের আগমন দর্শন করে বসুদেব এবং পুরে আগমন করা ব্যক্তিগণেদের নেত্র হর্ষাশ্রুতে পূর্ণ হয়ে গেল তথা হৃদয়ে পরম আনন্দের আগমন ঘটিল ।।৮০।।
তদনন্তর দেবর্ষি নারদ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আগমনে হর্ষিত হয়ে বসুদেব ও শ্রীকৃষ্ণের নিকট হইতে বিদায় অনুমতি গ্রহণ করে ব্রহ্মসভায় গমন করিলেন ।।৮১।।
ভগবান শ্রীহরির এই চরিত্র যাহার কীর্তির দ্বারা অপযশ দূর হয়ে যায়। যে বিমল ভক্তিসহকারে ইহা পাঠ করে এবং শুদ্ধচিত্তে ইহা শ্ররণ করে সে সুখপূর্ণ হয়, জগতে সর্বদা তার কামনা সিদ্ধি হয় এবং অন্তে সে গমনাগমন হতে মুক্তির মার্গ লাভ করে ।।৮২।।
ইতি শ্রীস্কন্দপুরাণের মানসখণ্ডে শ্রীমদ্দেবীভাগবতমাহাত্যের দ্বীতিয়োধ্যায়